২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা: বর্তমান দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যেভাবে ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, একই সাথে বাড়ছে দরিদ্র এবং শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। ঘুষ বানিজ্যের ব্যাপকতা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বর্তমানে একটি সরকারি দপ্তরে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরি নিতে গেলেও ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা গুনতে হয়। অথচ পরিবার এবং সমাজের তথাকথিত নিয়ম ভেঙ্গে আমরা নিজেরা কিছু করার সাহস দেখাইনা। কিন্তু একটা বিষয় আমাদের মাথায় আসেনা যে, অন্যের গোলামীর চাইতে একটা পান দোকানের মালিক হওয়া গর্বের।

কম পুজিতে ইউনিক বিজনেস আইডিয়া

বর্তমান সময়ে ব্যবসা সবাই করতে চায় কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন না থাকার কারণে ব্যবসা করার স্বপ্নপূরণ করতে সাহস পায়না। আজকের এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আপনি অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে এবং মেধা ব্যবহার করতে হবে। কেননা এই দুইটি জিনিষ সফলতার চাবি-কাঠি ।

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

অল্প পুজিতে টি/কফিশপের ব্যবসা

কফি শপের ব্যবসার প্রথমেই ভালো একটি ব্র্যান্ড নাম নির্বাচন করতে। এমন কোন সহজ নাম রাখতে হবে যাতে লোকেরা সহজেই সেটি মনে রাখতে পারে। তাছাড়া এ কথাও মাথায় রাখতে হবে যে, এমন কোনো নাম নির্বাচন করতে হবে যাতে সেই নামে বাজারে অন্য কোন কফিশপ এর নাম না থাকে অর্থাৎ সম্পূর্ণ আলাদা একটি নাম নির্বাচন করতে হবে।

কফি শপের জন্য সঠিক জায়গা

এমন কোনো জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে লোকজন এসে কিছু সময়ের জন্য বসে থাকে। কোন একজন ব্যক্তি তার বন্ধু অথবা গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে এসে যাতে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হয়। তাছাড়া যে জায়গাতে কফি শপ খোলা হবে সেখানে জনসংখ্যা কত আছে অর্থাৎ সেখানে কতজন লোক থাকে সেটাও দেখতে হবে। কফি শপ এর ভিতর বসার মতো যথেষ্ট এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গা থাকতে হবে। তাছাড়া উপযুক্ত লাইটিং কন্ডিশন এবং হালকা মিউজিক এর ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।

কফি শপের জন্য মেনু তৈরি

কফিশপ খোলার পর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মেনু কার্ড তৈরি। আপনি আপনার কাস্টমারদের কোন কোন ধরনের কফি বা অন্য কোন খাবার পরিবেশন করছেন সেটা একটি মেনু কার্ডে লিখতে হবে। বিভিন্ন ধরনের কফি এবং সেগুলোর দাম মেনু কার্ডে পরপর লিখে রাখতে হবে। যাতে কাস্টমাররা তাদের ইচ্ছা মতো এবং দাম অনুযায়ী কফি অর্ডার দিতে পারে। কফির দাম স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে কাস্টমাররা অসন্তুষ্ট হতে পারে। তাই দাম এমন ভাবে রাখতে হবে, কাস্টমাররা সন্তুষ্ট হয় এবং আপনারও লাভ থেকে যায়।

কফি শপের জন্য দরকারি জিনিস 

যখনই কোন খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুত করার বিজনেস শুরু করতে হয় তখন বেশ কিছু যন্ত্রপাতি এবং উপকরণের প্রয়োজন হয়। কফি শপের ক্ষেত্রে কফি বানানোর জন্য বেশকিছু মেশিন এবং উপকরণের প্রয়োজন পড়ে। আপনি উচ্চ মানের বা ভালো যন্ত্রপাতি কেনার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনি যদি নিম্ন কোয়ালিটির কফি বানান তাহলে কাস্টমার সেটা পছন্দ করবে না। তাতে আপনারই লোকসান হবে। কফি শপের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু জিনিসপত্রের নাম নিচে দেওয়া হলো এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

  • অটোমেটিক ড্রিপ কফি মেশিন
  • উচ্চমানের এক্সপ্রেস মেশিন
  • ইন্ডাস্ট্রিয়াল কফি গ্রাইন্ডার
  • দুধ এবং জল
  • ফ্রিজ
  • খাদ্যদ্রব্য রাখার জায়গা
  • ওভেন, টোস্টার এবং খাবার জিনিস বানানোর মেশিন

কফি শপের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা এবং লাভ

কফি শপের ব্যবসা করার জন্য আপনাকে ভালো অংকের টাকা বিনিয়োগ বা ইনভেস্ট করতে হবে। আর এই ব্যবসায় ইনভেস্ট একবারই করতে হয়। তারপর আপনি আপনার কাজ অনুযায়ী এর ফল পাবেন। প্রথম দিকে একটু লাভ কম হতে পারে কিন্তু পরবর্তীকালে ব্যবসা যত পরিচিতি লাভ করবে ততই আপনার লাভের পরিমাণ বাড়বে। যদি আপনি আপনার কাস্টমারদের সঠিক দামে সঠিক জিনিস বিক্রি করেন তাহলে আপনার লাভ অনিবার্য। যেকোনো ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি লাভ পাওয়া যায় না। এর জন্য পরিশ্রম এবং ধৈর্য প্রয়োজন হয়। তাই যদি আপনি কফি শপ খুলতে চান তাহলে শুরু করতে পারেন।

কফি শপের জন্য কর্মচারী

যেকোনো ব্যবসার জন্য কর্মচারী প্রয়োজন। আপনি চাইলে যতই একা কাজ করতে চান না কেন ব্যবসা কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। কফি শপের জন্যও কর্মচারীর প্রয়োজন। তাই আপনি কয়েকজনকে আপনার কফিশপে কাজে কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত করতে পারেন। আর এর জন্য আপনি কোন বিজ্ঞাপন দিতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী আপনি আপনার দোকানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাজে লাগাবেন। এই কাজের জন্য আপনি খুব সহজেই লোক পেয়ে যাবেন।

কফি শপের ব্যবসার ট্রেনিং

যে কোন ব্যবসার মতো কফি শপের ব্যবসার ক্ষেত্রে একটু পরিশ্রম করতে হয়। যেমন ব্যবসা কে বোঝার জন্য আপনি আপনার আশপাশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলতে পারেন। তাছাড়া এখনকার দিনে ইউটিউব গুগোল ইত্যাদি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। এই ধরনের ব্যবসার জন্য কর্মচারীদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। যেমন কফি শপের কাজের ম্যানেজমেন্ট সঠিকভাবে কিভাবে করতে হয় সেগুলো কর্মচারীদের ভালো করে বুঝিয়ে দিতে হবে।

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

অনলাইন লন্ড্রি

ব্যাচেলর জীবনে সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজ হলো পরিধেয় কাপড় পরিষ্কার করা। শিক্ষার্থীদের জন্য এই কাজটা আরো কঠিন। কারণ সারাদিন ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব করার পর যে সময়টুকু পাওয়া যায় তখন ব্যবহৃত প্রতিদিনের ময়লা কাপড় ধোয়া সম্ভব হয় না। এমন যদি কোনো সার্ভিস থাকে ময়লা কাপড়গুলো কেউ ধুয়ে দিবে, তাহলে কেমন হয়?

আজ একটি গল্পের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনি আপনার  শহরে অনলাইনভিত্তিক লন্ড্রির ইউনিক ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। 

গাছতলা থেকে শুরু

কোনো এক শীতের পড়ন্ত বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামের পাশে বটগাছ তলায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন হামীম ও সালমান। নিজেদের খরচ চালানোর জন্য কি করা যায় ভাবছিলেন তারা। সকালে সালমানের কাপড় ধুতে গিয়ে মনে হলো, ইশ! যদি এমন কোনো ম্যাজিক থাকত প্রতিদিন ময়লা কাপড়গুলো কেউ ধুয়ে দিত। তাহলে আলাদাভাবে কাপড় ধোয়ার জন্য কষ্ট করতে হত না। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের ময়লা কাপড় ধুয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিলে কেমন হয়? হামীমকে জিজ্ঞেস করে সালমান। হামীম প্রস্তাবে সাড়া দেন। ব্যাগ থেকে খাতা-কলম বের করে হিসেব করেন কত খরচ হতে পারে।

সালমান ফারসি জানান, প্রথমে ভেবেছিলাম প্যাকেজ সিস্টেমে করব। একজন শিক্ষার্থীর একমাসে কতগুলো জামা ব্যবহার করে সে হিসেব করলাম। ৪-৫টি প্যান্ট, ৭-৮টি শার্ট-গেঞ্জি হলেই মোটামুটি হয়ে যায়। সেই হিসেবে আমরা যদি মাসে একবার কাপড় ধুয়ে দেওয়ার জন্য ১২০টাকার প্যাকেজ করি তাহলে খুব বেশি না। কারণ একবার ধুয়ে নিলেই সারা মাস আর চিন্তা করতে হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের ১১টি হল রয়েছে, প্রত্যেক হলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪০০-৫০০ জন। আমরা যদি তাদের মধ্যে থেকে ১০ জনও পাই তাহলে মোটামুটি ব্যবসা ভালো হবে। সেই আইডিয়া থেকেই সাহস নিয়ে এমন উদ্যোগ নিলাম। ফেসবুক পেজ খুললাম ‘ধুয়ে দেই’।

কিস্তিতে স্বপ্নের যাত্রা

ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে প্রথমেই প্রয়োজন একটি ওয়াশিং মেশিন। কিন্তু তা কেনার মতো সামর্থ্য তাদের দুজনের নেই। তাদের এই আইডিয়ার কথা জানান পলাশ ও বিশালকে। তারাও বিষয়টি ভালোভাবে নেন। এরপর প্রত্যেকের দুই হাজার করে টাকা দিয়ে ৮ হাজার টাকা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে কিস্তিতে নেন ওয়াশিং মেশিন। সেইদিন নিজেদের কাপড় ধুয়ে ট্রায়াল দেন তারা। পরদিন অফিসিয়ালি শুরু করেন তাদের যাত্রা।    

করোনার হানা, স্বপ্নে হোঁচট

এদিকে ২০২০ সালের মার্চে সারাবিশ্বে হানা দেয় করোনা মহামারি। দেশেও তা ছড়িয়ে পড়ে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় তাদের ‘ধুয়ে দেই’ সার্ভিস। তারপরও প্রতিমাসে কিস্তি পরিশোধ করতে হত তাদের। কোনো রকমে সে কিস্তি চালিয়ে নেয় তারা। করোনা মহামারির পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আবারো নতুন করে শুরু করেন তারা। এরপর থেকে বেশ ভালোভাবেই চলছে।

মানুষের বাজে মন্তব্য

প্রথম যখন কাজটা শুরু করেন মানুষজন এটা নিয়ে হাসাহাসি করে। ধোপা বলেও উপহাস করে তাদের। সহপাঠী, বন্ধু এমনকি শিক্ষকরাও এটা নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। ছাত্র অবস্থায় কি শুরু করছ? তোমাদের কেউ বিয়ে করবে না? বাসায় জানে এসব ধোপাগিরি করছ? আরো কত অপমান সহ্য করতে হয়েছে তাদের। তারপরও তারা পিছু হটে যায়নি।

কাপড় পরিষ্কার করার রেট

হামীম জানান, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই কম খরচে এই সেবা দেন তারা। প্রতিটি প্যান্ট ১০টাকা, টিশার্ট ৭ টাকা, শার্ট ৮ টাকা, মোটা কম্বল ১২০ টাকা, পাতলা কম্বল ৮০ টাকা, ড্রাইওয়াশ ১৮০ টাকা। আর প্রতিটি কাপড় ইস্ত্রি করতে নেয়া হয় ৫ টাকা। সবমিলিয়ে এখন ভালোই চলছে। প্রথম দিকে যেমন চলেছে তার থেকে এখন ৩-৪ গুণ ভালো চলছে জানান হামীম।

যেসব জায়গায় সেবা দেন তারা

রাবি ক্যাম্পাস ছাড়াও রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন জায়গায় এই সেবা চালু করেছেন তারা। হামীম বলেন, প্রথমে শুধু রাবি ক্যাম্পাসে এই সেবা সীমাবদ্ধ ছিল। এখন আমরা রুয়েট, বিনোদপুর, কাজলা, অক্ট্রয় মোড়, তালাইমারি, নর্দান মোড়, মুন্নাফের মোড়, সুইটের মোড়সহ শহরের বিভিন্ন জায়গাতে এই সেবা দিয়ে আসছি। আলহামদুলিল্লাহ এখন খুব ভালো চলছে।

যেভাবে নেয়া যাবে সেবা

কেউ যদি তাদের সার্ভিসটি নিতে চায় তাহলে ফেসবুক পেজে (ধুয়ে দেই) হলের নাম, রুম নম্বর, ফোন নম্বর মেসেজ করতে হবে। যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে তারা একইভাবে ঠিকানা দিয়ে মেসেজ করবে। পেজ থেকে তারা অর্ডার কনফার্ম করবে। এরপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সেই সব জায়গায় গিয়ে কাপড়গুলো সংগ্রহ করে। এরপর ধুয়ে, রোদে শুকিয়ে, ইস্ত্রি করে পরেরদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সবার কাপড়গুলো পৌঁছে দেয় তারা। 

উপহাস করা মানুষরাই এখন করেন প্রশংসা

শুরুতে যারা তাদের ‘ধুয়ে দেই’ সার্ভিস নিয়ে উপহাস করেছে এখন তারাই প্রশংসা করে। নিয়মিত সেবাও নেন তাদের থেকে। সালমান বলেন, এখন আমাদেরকে অনেকে উৎসাহিত করে। এই পরিবর্তনটা আসে মূলত যখন আমাদের সার্ভিসে সবাই উপকৃত হতে থাকে। এরপর থেকে সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে থাকে।

শিক্ষকদের মন্তব্য

বিষয়টি যখন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষকরা জানতে পারেন তাদের এই ব্যতিক্রম উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তাদের কাজে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। 

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হোসেন বলেন, বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছি। তাদের সৃজনশীল বুদ্ধি রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের এই কাজের জন্য উৎসাহ প্রদান করেছি। বিভাগ তাদের নিয়ে গর্ব করে। এ ধরনের সৃজনশীলতা এবং নতুনত্ব নিয়ে কোনো শিক্ষার্থী যদি কিছু করতে চায় অবশ্যই আমরা তাদের পাশে থাকব।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে হামীম বলেন, আমাদের এই কার্যক্রমটা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের প্রথম টার্গেট হলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সেবা পৌঁছে দেওয়া। এখান থেকে আস্তে আস্তে শহর কেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিব। 

সালমান বলেন, এখন আপাতত রাবি, রুয়েট এবং এর আশেপাশের এলাকায় সার্ভিস চালু রয়েছে। এই মাস থেকেই আমরা পুরো শহরে সার্ভিস দেওয়া শুরু করব। আমরা একটা ভ্যানগাড়ি নিয়েছি, এর সাহায্যে পুরো রাজশাহী শহর কভার করার চেষ্টা করব।

ডেইলি-বাংলাদেশ/কেবি

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

কাঁচা সবজি হোম ডেলিভারি

অল্প পুঁজির ব্যবসা হিসেবে এই চমৎকার ব্যবসাটি বেছে নিতে পারেন। এই ব্যবসাটি অনেক আনকমন।

এই ব্যবসায় কম্পিটিশন খুবই কম। তাই এই ব্যবসাটি করলে আপনি খুব সহজেই সফলতা লাভ করতে পারবেন।

এই ব্যবসাটি করার নিয়ম :

  • সর্বপ্রথম আপনি একটি এরিয়াকে টার্গেট করবেন।
  • এরপর গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কথা বলবেন।
  • তারপর তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন গ্রাম অঞ্চল থেকে তাজা সবজি সংগ্রহ করবেন।
  • তারপর খুব সহজেই হোম ডেলিভারি দিবেন।

এই ব্যবসা করতে পুঁজি খুবই কম লাগবে। আর সফলতা খুব দ্রুত আসবে। আশা করি আপনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

ফুচকার ব্যবসা

এই চমৎকার ব্যবসাটি গ্রহণ করতে পারেন। ফুচকা এমন একটি চমৎকার খাবার যেটা ছোট থেকে বড় সকলেই পছন্দ করে।

ফুচকার চাহিদা কখনো কমবে না বরং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। অতএব আপনি অল্প পুঁজির ব্যবসা হিসেবে সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন।

এই ব্যবসা করার নিয়ম :

  • এই ব্যবসা করার জন্য অবশ্যই আপনাকে এমন একটি স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে লোক সমাগম হয়। যেমন : স্কুল কলেজ , বাজার ঘাট , বাস স্ট্যান্ড , বড় বড় শোরুম ইত্যাদি এসব জায়গা বেছে নিতে হবে।
  • এরপর বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে ফুচকা তৈরি করার সরঞ্জামি কিনে নিবেন। কেননা পাইকারি বাজারগুলোতে কম মূল্যে পণ্য পাওয়া যায়।
  • ফুচকা অবশ্যই ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। এর জন্য আপনি বিভিন্ন পারদর্শী ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিখতে পারেন। অথবা ইউটিউব থেকে শিখে নিতে পারেন। কেননা আপনার ফুচকা যত মজা হবে তত গ্রাহক বাড়তে থাকবে।

মোবাইল রিচার্জ বিকাশের ব্যবসা ২০২৩

বর্তমানে এই ব্যবসাটার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। কেননা ছোট থেকে বড় প্রতিটা মানুষের হাতেই স্মার্টফোন রয়েছে।

যেহেতু মোবাইল রয়েছে তাহলে তো অবশ্যই রিচার্জ করে। বোঝা গেল রিচার্জের অনেক চাহিদা রয়েছে। রিচার্জের সাথে সাথে বিকাশের ব্যবসা করতে পারেন।

কারণ বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করে । অতএব আপনি রিচার্জের পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসা করতে পারেন।

এ দুইটার সাথে মোবাইলের আরো নানান জিনিস দোকানে রাখতে পারেন। এ ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে :

সেটা হল দোকানের জায়গা এমন একটি স্থানে নির্ধারণ করা যেখানে লোক সমাগম হয়। গ্রামের ক্ষেত্রে বাজার। আর শহরে ক্ষেত্রে কোন নামকরা স্থান যেমন গুলিস্থান ইত্যাদি।

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

ব্লগিং করে টাকা আয় ২০২৩

একজন ব্লগার প্রথম বছর প্রতি মাসে ৫০০ হতে ১,০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারে। তার পরের বছর গুলোতে ব্লগিং আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। একজন ফুলটাইম ব্লগার প্রতি বছর গড়ে ১ লক্ষ হতে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারে শুধু প্রতি সপ্তাহে ২০ হতে ২৮ ঘন্টা দিয়ে।

ব্লগের আয়ের নির্ভরতাঃ ব্লগের আয় সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরকরে ব্লগের ট্রাফিকের উপর। আপনার ব্লগ ট্রাফিক যত বেশি হবে ব্লগ থেকে আয় তত বেশি হবে। ব্লগের আয় নির্ভর করে আরও একটি বিষয়ের উপর আর সেটা হল ইমেইল লিষ্টের উপর।

আপনার ইমেইল লিষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ব্লগের আয় বৃদ্ধি পায়। কারন, আপনার ইমেইল লিষ্ট থাকলে সেই লিষ্টের ব্যক্তি গুলোর কাছে আপনার ব্লগের নিউ পোষ্টের প্রচারনা চালাতে পারবেন।

বাংলা ব্লগিং করে আয়ঃ অনুমানিক বাংলায় ব্লগিং করে আয় প্রথম বছর ৩৬০ হতে ৪০০ ডলার, দ্বিতীয় বছর ৫০০ হতে ৬০০ ডলার, তৃতীয় বছর ৭০০ হতে ১০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম হতে পারে (অনুমানিক ব্লগিং আয় )। আমি যে আয়ের কথা গুলো বললাম তা শুধু এড রেভিনিউ ভিত্তি। এড রেভিনিউ ব্যতিত হাজার হাজার উপায় আছে ব্লগ থেকে আয় করার।

ইংরেজি ব্লগিং করে আয়ঃ একটি ইংরেজি প্রথম শ্রেনীর ব্লগ প্রথম বছর ২৫ হাজার হতে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করে, দ্বিতীয় বছর ১ লক্ষ ডলার, তৃতীয় বছর ২৫০ হাজার ডলার এবং চতুর্থ বছর ৫ লক্ষ ডলার পর্যন্ত আয় করে। ব্লগের আয় দিন দিন ‍বৃদ্ধি পাওয়ার কারন হচ্ছে ব্লগ ট্রাফিক Revenue। আপনার রেভিনিউ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ব্লগ আয় বৃদ্ধি পায়।

ব্লগ ট্রাফিক সমান রেভিনিউ

আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি এড পেজে ভিজিট করার জন্য জন্য পাবেন ০.০১ থেকে ০.২৫ সেন্ট, এটা অবশ্য নির্ভর করে আপনার ওয়েব সাইটের টপিক।

প্রতি দিন ১,০০০ হাজার পেজ ভিউ করার জন্য মাসে আয় করতে পারবেন ১০০ হতে ১৫০ ডলার। ( এটা অনুমান নির্ভর উত্তর সুতরাং আয় কম বা বেশি হতে পারে।

যদি কোন ব্লগের পেজ ভিউ প্রতি মাসে ১ লক্ষ হয় তাহলে মাসে আয় হবে ১,০০০ হতে ২৫,০০ ডলার। আপনার ব্লগ টপিক ইন্স্যুরেন্স হয় তবে প্রতি ব্লগ এড ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য পাবেন ০.২০ সেন্ট। অন্য সব বিষয়ের উপর ব্লগ হলে প্রতি এড পেজ ভিউ করার জন্য পাবেন ০.০২ থেকে ০,০৫ সেন্ট ( অনেক ক্ষেত্রে কম বেশি হতে পারে )।

সব আয় নির্ভর করবে ব্লগের ট্রাফিকের উপর। আপনার ব্লগ সাইটের ট্রাফিক বেশি হলে আয় বেশি হবে।

ব্লগে ট্রাফিক পাওয়ার জন্য SEO করতে হবে।

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কী টাকা ইনভেস্ট করতে হয়

অবশ্যই আপনাকে ব্লগ থেকে টাকা আয় করার জন্য টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। কারন ব্লগিং বর্তমানে ব্যবসায় একটি ধরন। সমস্ত বিশ্বে অনেক ব্লগিং কোম্পানি আছে। যেমন Dotdash কোম্পানিটির ১৪টির বেশি ব্লগ সাইট আছে। এবং প্রতিটি ব্লগ সাইট প্রচুর জনপ্রিয়। Dotdash প্রতি মাসে প্রায় কয়েক লক্ষ ডলার আয় করে।

পরিপূর্ণ ব্লগ সাইট প্রতিষ্টিত করার জন্য আপনাকে মিনিমাম ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। ব্লগ সাইট ইনভেস্ট করার ক্ষেত্রে সুবিধা হল ধীরে ধীরে ইনভেস্ট করতে হয়।

সঠিক ভাবে ব্লগিং করার জন্য ইনভেস্ট করতে পারলে আপনার আয় হবে গ্যারান্টি। ব্লগিং বিনিয়োগ বিষয় বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য নিচের লেখাটি পড়তে পারেন।

ব্লগিং থেকে আয় শুরু হতে কত দিন সময় লাগে

ব্লগিং শুরু করার আগে পরিকল্পনা করা জরুরি। সঠিক পরিকল্পনা ছারা ব্লগিং সেক্টরে সফল হওয়া অসম্ভব। ব্লগ শুরু করার প্রথম কাজ হচ্ছে বিষয় নির্বাচন করা। আপনি যে বিষয় নিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন তা বাছাই করতে হবে।

আপনি হয়তো ভাবছেন যে কোন বিষয় ব্লগিং শুরু করা যায়। আপনি যখন প্রফেশনাল ব্লগিং শুরু করবেন তখন সটিক ভাবে বিষয় নির্বাচন করতে হবে।

আপনাকে এমন একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে যার কম্পিটিশন কম কিন্তু সার্চ ভেলু ভালো।

ব্লগ বিষয় বাছাই করা শেষে ব্লগ ডিজাইন নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রফেশনাল ব্লগ গুলোকে ফলো করতে পারেন।

ব্লগ ডিজাইন করা শেষ হলে, অনপেজ এসইও রিলেটেড বিষয় গুলোর কাজ করতে হবে। যেমন কিওয়াড রিসার্স, কম্পিটিশন রিসার্স, গুগল এনালাইটিক, Google Search Console Setup ইত্যাদি বিষয় গুলো সেটাপ শেষ করতে হবে।

ব্লগ কন্টেন্ট লিখতে হবে। এই লেখার কাজে আপনাকে সময় লাগবে বেশি। ব্লগের প্রতিটি কন্টেন্ট অবশ্যই ইউনিক এবং অনপেজ এসইও ফ্রেন্ডলি হতে হবে। কন্টেন্ট কোয়ালিটির ক্ষেত্রে কোন ধরনের কম্প্রমাইজেশন করা যাবে না।

সব কিছু সময় নির্ধারন করলে সময় লাগবে মিনিমাম ২ থেকে ৩ মাস। ২ থেকে ৩ মাস পরে আয় শুরু হতে মোট সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ মাস।

২০২৩ সালে অল্প পুজিতে ১৫ টি লাভজনক ব্যবসা

অল্প পুজিতে ফুলের ব্যবসা 

কম পুঁজির ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্যে ফুলের ব্যবসা বেশ লাভজনক। আপনি যদি এ ব্যবসায় আসতে চান, তাহলে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য জেনে নিন এ লেখায়।

ফুলের ব্যবসার ধরন

সাধারণত বিয়ে, পারিবারিক অনুষ্ঠান, মেলা-উৎসব, বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, জনসভা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দিবস পালনের জন্য ফুলের প্রয়োজন পড়ে। এ ফুলের যোগান দেবার কাজ করেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুলের পাশাপাশি পাতাও বিক্রি করে থাকেন তারা। যেমনঃ বিয়ের স্টেজ সাজানোর ক্ষেত্রে কামিনী পাতার চাহিদা রয়েছে।

পাইকারি ও খুচরা – দুইভাবেই ফুলের ব্যবসা করা সম্ভব। পাইকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে অর্ডারের পরিমাণ বড় হয়।

ঋতু অনুযায়ী ফুল বিক্রি করে থাকেন ব্যবসায়ীরা।পাইকারি ও খুচরা – দুইভাবেই ফুল বিক্রি করা সম্ভব।কৃত্রিম ফুলের চাহিদাও রয়েছে ক্রেতাদের কাছে।

ফুলের ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি

ফুলের ধরন ও দোকান/স্টোরের আকারের ভিত্তিতে পুঁজির হেরফের হয়। শুরুতে আপনাকে গড়ে ৩০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হবে।

ফুলের ব্যবসায় যেমন কর্মী দরকার

ফুলের দোকানগুলোতে সাধারণত দুই ধরনের কর্মীর দরকার হয়:

  • কারিগর: ফুলের তোড়া, লহর (বাসর ঘর সাজানোর উপকরণ), পুষ্পস্তবক, ফুল রাখার ঝুড়িসহ বিভিন্ন জিনিস বানানোর কাজ করেন।
  • সেলসম্যান: ক্রেতার সাথে দর কষাকষির কাজ করেন।

ফুলের তোড়া বানানোর দায়িত্বে থাকেন একজন কারিগর।

সাধারণত একেকটি দোকানে ২-৭ জন কর্মী নিযুক্ত থাকেন। কর্মীসংখ্যা নির্ভর করবে আপনার পুঁজি, লাভ ও দোকানের আকারের উপর।

ফুলের ব্যবসায় লাভের পরিমাণ

মূলত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত খুচরা ব্যবসায় ফুলের চাহিদা থাকে। পাইকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে এ চাহিদা এপ্রিল পর্যন্ত গড়ায়। এ সময় লাভের পরিমাণ প্রতি মাসে গড়ে ১ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়।

এপ্রিল-অক্টোবর মাসে ফুলের চাহিদা কম থাকায় মাসে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে।

 

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস শুরু করুন

এখন আপনার প্রশ্ন হতে পারে যে কেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করব? এর উত্তরে বলল বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার সংকট। হওয়ার জন্য আপনি এই ধরনের ব্যবসার আইডিয়া গুলো বেছে নিতে পারেন। যেগুলো মাধ্যমে আপনি ভালো করে, টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

এখন আপনার আবারও প্রশ্ন জাগতে পারে যে বর্তমান সময়ে এত বেশি ব্যবসার আইডিয়া থাকার পর, কেন আমরা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসা করব?

এ প্রশ্নের উত্তর হিসেবে আমরা আপনাকে বলব সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে, ইভেন ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসা শুরু করা। কারণ এখানে আপনি অল্প টাকা খাটিয়ে ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।

এছাড়া আপনি কিভাবে ম্যানেজমেন্ট বিজনেস এর সাথে নিজের স্বয়ংক্রিয় ভাবে জড়িত থাকতে পারবেন এবং নিজের ব্যবসাটি সহজেই পরিচালনা করতে পারবেন।

এছাড়া আপনারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করার ফলে, অবশ্যই কিছু সংখ্যক জনবল নিয়োগ করতে হবে কারণ আপনারা কোন অনুষ্ঠানের, সকল প্রকার দায়িত্ব পালন করতে গেলে অবশ্যই কিছু লোকজনের প্রয়োজন হবে। আর সেগুলো পরিচালনা করার জন্য কিছু লোকের দরকার হবে আর সেই লোক গুলো আপনি কিছু বেতন দিয়ে রাখতে পারেন।

আর বিশেষ করে আপনার যদি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করেন এ ব্যবসাতে, ঝুঁকির পরিমাণ অনেক কম থাকে। একটি ব্যবসার জন্য অনেক বেনিফিট বলে আমরা বিবেচনা করে থাকি।

তাছাড়া এ ব্যবসাতে আপনি আরও অনেক কিছু নির্ধারণ করতে পারবেন যেমন ব্যবসা করার সময় আপনি অনেক বেশি পরিমাণে অবসর সময় পেয়ে যাবেন। যে সময় গুলোতে আপনি চাইলে পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের কাজগুলো করতে পারবেন।

কারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করতে পারবে?

এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে যে কারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা শুরু করতে পারবে? এর উত্তরে আমরা জানাবো বর্তমান সময়ে যারা চাকরি পিছনে ছুটাছুটি করে চাকরি পাচ্ছেন না তাদের জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষ করে যে সকল স্থানে যেমন উপযুক্ত ব্যক্তি দেয় কিন্তু স্থান পায় ঠিক সেরকম ভাবে, আপনি যদি মানেজমেন্ট বিজনেস করতে চান। এক্ষেত্রে আপনার মধ্যে অনেক গুণাবলী থাকতে হবে।

এছাড়া সেই গুণাবলীগুলো সম্পর্কে ক্লিয়ার ভাবে আলোচনা করবো, আপনার যদি অন্যান্য সফল ব্যবসায়ীদের মত, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা শুরু করতে চান। এবং থেকে ভালো টাকা উপার্জন করতে চান তাহলে আপনার মধ্যে অনেক গুণাবলী ও দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-

আয়োজন করার যাবতীয় বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে?

আপনারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসাতে নিজেকে সরাসরি জড়িয়ে থাকতে পারবেন এবং আপনি যখন সবকিছু পরিচালনা করবেন সে, সময় অবশ্যই আপনি নিজের যেকোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা দক্ষতা থাকতে হবে।

কারণ এ ধরনের কাজ আপনি যত বেশি দক্ষতার সাথে করতে পারবেন আপনার এই ব্যবসা থেকে সেই পরিমাণের লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। যেমন আপনি যদি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। তবে সেখানে আপনি যেভাবে কাজ করেন সেই কাজ কিন্তু আপনি কোন জন্মদিনের আয়োজন করতে পারবেন না।

ঠিক এরকম ভাবে, আপনাকে এইসব বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হতে হবে, তাহলে আপনারা যেকোনো আয়োজন সহজভাবে করতে পারবেন।

পরিকল্পনা করার মতো সক্ষমতা

আমরা সকলেই জানি যে পরিকল্পনা ব্যতীত কোন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা যায় না। আপনি যে কাজগুলো করবে থেকে সঠিক পরিকল্পনা করবেন আপনার সেই কাজগুলো সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এতে করে, আশা করা যায় আমাদের এই কথার সাথে আপনিও কোন দ্বিমত পোষন করবেন না।

ঠিক এরকম ভাবে আপনি যখন ইভেন ম্যানেজমেন্ট বিজনেস করবেন। তখন আপনাকে যথাযথ সময়ে পরিকল্পনা করতে হবে কিভাবে আপনি যে, কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন।

এতে করে কি পরিমাণ এর কর্মচারী প্রয়োজন হবে এই সকল বিষয়ে আপনাকে দক্ষতার সাথে পূর্ব পরিকল্পনার মতো দক্ষতা রাখতে হবে।

উপর্যুক্ত বাজেট তৈরি করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে ?

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাজেট তৈরি করা। কারন এ ধরনের বাজেটের উপর ভিত্তি করে আপনার আয় হবে নাকি হবে সেটি নির্ভর করবে।

আপনি যদি সঠিকভাবে তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনার ইনকাম এর পরিমাণ ঠিক তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। মনে করুন আপনি কোন একটি বিয়েবাড়িতে ইভেন ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এখন সেই অনুষ্ঠানে কি পরিমান খরচ করতে হবে আর সেই অনুষ্ঠান থেকে, কি পরিমান টাকা চার্জ নিবেন। সে বিষয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।

ট্রাভেল এজেন্সির বিজনেস

ট্রাভেল এজেন্সির কাজ কি ?

ট্রাভেল এজেন্সির নানান ধরনের কাজ হতে পারে। যেমন : প্লেন এর টিকিট কাটা , বাসের টিকেট কাটা , ট্রেনের টিকিট কাটা , ভ্রমণের সময় নানান ধরনের গাইড করা ও ভ্রমণের সমস্ত দায়- দায়িত্ব নেওয়া, হোটেল বুকিং করা , ট্রাভেলের বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ তৈরি করে বিক্রি করা ইত্যাদি এরকম আরো নানান কাজ রয়েছে ট্রাভেল এজেন্সির। ট্রাভেল এজেন্সি দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • ছোট ট্রাভেল এজেন্সি। এরা যে কোন একটি বিষয় নিয়ে কাজ করে। যেমন শুধু বাসের টিকেট কেটে দেওয়া অথবা শুধু হোটেল বুকিং করা ইত্যাদি।
  • বড় ট্রাভেল এজেন্সি। এরা একটি ভ্রমণ করতে যা যা প্রয়োজন হয় সমস্ত কাজগুলো আঞ্জাম দিয়ে থাকে। অর্থাৎ তারা একটি ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে সমস্ত কাজের প্রয়োজন হয় প্রত্যেকটি কাজ তারা আঞ্জাম দিয়ে থাকে বা ব্যবস্থাপনা করে থাকে।

ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা কিভাবে শুরু করব ?

যেমনিভাবে প্রত্যেকটি ব্যবসা শুরু করার জন্য বিজনেস প্ল্যান লাগে ঠিক তেমনিভাবে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করার জন্য ভালোভাবে একটি প্ল্যান তৈরি করতে হবে। এরপর আপনাকে ডিসাইড করতে হবে আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন।

অর্থাৎ একটি ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাজ আঞ্জাম দিবেন নাকি যে কোন একটি কাজ আঞ্জাম দিবেন এ ব্যাপারে শুরুতে আপনাকে ডিসাইড করতে হবে।

এরপর ওই জায়গা সম্পর্কে ভালোভাবে আপনার আইডিয়া থাকতে হবে যে জায়গায় গ্রাহকদেরকে আপনি ভ্রমণের জন্য নিয়ে যাবেন।

এরপর হোটেল মালিকদের সাথে ভালোভাবে কথা বলতে হবে। যাতে করে পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।

পাশাপাশি হোটেল মালিকদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে হবে যে তারা আপনাকে কতটা কমিশন দেবে। তারপর আপনি ধীরে ধীরে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

বিস্তারিত ভাবে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

এখানে আমি আলোচনা করব ট্রাভেল এজেন্সি শুরু করার জন্য আপনাকে কোন কোন বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করতে হবে এবং কোন কোন নিয়ম মেনে চলতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে কোন ধরনের সমস্যা না পারেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

১. চমৎকার একটি নাম নির্বাচন করুন

নতুন একটি কোম্পানির জন্য নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নামটি রাখবেন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে মিল রেখে। যাতে করে নাম শুনে যে কেউ বুঝতে পারে যে এটা একটি ট্রাভেল এজেন্সি।

পাশাপাশি নামটি সহজ রাখার জন্য চেষ্টা করবেন। এতে করে খুব সহজে মনে থাকবে। আরো বিস্তারিত জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

২. ট্রাভেল এজেন্সির জন্য লাইসেন্স করতে হবে। 

একটি কোম্পানির জন্য লাইসেন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। লাইসেন্স থাকলে নানান ধরনের ক্ষতি থেকে কোম্পানিকে রক্ষা করবে। তাই অবশ্যই গুরুত্বের সাথে লাইসেন্স করবেন।

রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

আপনাকে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ফরম ডাউনলোড করুন। এরপর আপনি ফরমটি পূরণ করে জমা দিবেন।

ফর্মটি জমা দেয়ার সময় আরো কয়েকটি বিষয় জমা দিতে হবে।

  • লাইসেন্সের ফটোকপি জমা দিতে হবে
  • সর্বনিম্ন 10 লক্ষ টাকার স্থিতির ব্যাংক সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
  • অংশীদারি কোম্পানি বা লিমিটেড কোম্পানি হলে সত্যায়নকৃত সার্টিফিকেট এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • টিআইএন এর সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
  • ট্রেজারি চালান এর মূল কপি জমা দিতে হবে।
  • ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হরফ নামা করে জমা দিতে হবে।
  • রেজিস্ট্রেশন এর জন্য ৫০০০০ টাকা জমা দিতে হবে।
  • আবেদনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দিতে হবে।

৩. সেবার ধরন ঠিক করতে হবে

অর্থাৎ আপনি ট্রাভেল এজেন্সি হিসেবে কি কি সার্ভিস দিবেন এগুলো আপনাকে সর্বপ্রথম নির্ধারণ করতে হবে। সম্পূর্ণ সার্ভিস দিবেন নাকি আংশিক সার্ভিস দিবেন এভাবে নির্ধারণ করতে হবে। এ সমস্ত চিন্তা ভাবনা শুরুতেই করে ফেলবেন।

৪. বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা

একটি ব্যবসার জন্য প্ল্যান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্ল্যান ছাড়া কখনোই কোন জায়গায় সফলতা লাভ করা যায় না। তাই শুরুতেই আপনি সমস্ত প্ল্যান নির্ধারণ করবেন। এতে করে খুব দ্রুতই আপনি সফলতা লাভ করতে পারবেন। এবং নানান ধরনের প্রবলেম গুলো সলভ করতে পারবেন।

৫. চমৎকার ও আকর্ষণীয় জায়গা সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখা

অর্থাৎ এ ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে আকর্ষণীয় জায়গা সম্পর্কে ভালোভাবে পরিচিত লাভ করতে হবে।

পাশাপাশি সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা, থাকার ব্যবস্থা , খাওয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়া নিতে হবে।

৬. সুন্দর একটি জায়গায় অফিস তৈরি করা ও গুছিয়ে রাখা

অর্থাৎ অফিসটি চমৎকার একটি জায়গায় তৈরি করবেন পাশাপাশি পরিপাটি করে রাখবেন। কেননা যারা ভ্রমণ ভালোবাসে তারা সুন্দর ও গোছানো জিনিস পছন্দ করে।

তাই অবশ্যই আপনার অফিসটাকে চমৎকার করে রাখবেন ও পরিপাটি করে রাখবেন। যাতে করে গ্রাহকরা আকর্ষিত হয়।

৭. ট্রাভেল এজেন্সির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করা

বর্তমানে মানুষ অনলাইনের প্রতি ধাবিত। প্রত্যেকটি কাজ অনলাইনের মাধ্যমে সম্পাদন করে। তাই আপনি যদি আপনার এজেন্সি নিয়ে অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন এবং ভালোভাবে মার্কেটিং করেন।

তাহলে গ্রাহকের অভাব হবে না। প্রচুর গ্রাহক পাবেন ভ্রমণের জন্য। তবে অবশ্য আপনাকে একটি চমৎকার ওয়েবসাইট তৈরি করে আকর্ষণ আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিও আপলোড দিতে হবে এবং নানান ধরনের তথ্য দিতে হবে। যাতে করে গ্রাহকরা আকর্ষিত হয়।

৮. ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করা

আপনার এজেন্সি যে নামে খুলেছেন ওই নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করবেন। এই একাউন্টে বিজনেস সংক্রান্ত সমস্ত লেনদেন করবেন।

 ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তথ্য দেওয়া হল।

আশা করি আপনি সমস্ত আর্টিকেলটি পড়েছেন এবং উপকৃত হয়েছে। এজন্য অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। এবং কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

ট্র্যাভেল এজেন্সি ব্যবসায় লাভ কেমন ?

এ ব্যবসায় লাভ অনেক বেশি। অল্প পুঁজি খাটিয়ে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। এজন্য অবশ্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে ও বিজনেস প্ল্যান অনুযায়ী চলতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post